পোস্টগুলি

হুপু আর তিতলি

ছবি
  হুপু আর তিতলি। তিতলি হনুমানটির নাম দিয়েছিল, হুপু। খুব ছোট নয় আবার গোদাও নয়। খাঁকি রঙের লোমে মোড়া লম্বা লেজ আর কালো মুখের হুপুর কপালে জানলার চাঝার মত লম্বা লোমের পরত। প্রতিদিন দুপুরে এবাড়ির ছাদ ও বাড়ির টালির চালা টপকে হুপু তিতলিদের পেয়ারা গাছে বা আমগাছে আয়েসি মেজাজে লেজ ঝুলিয়ে বসত। কেউ কাছে গেলেই দাঁত বেড় করে এমন ভয় দেখাত তো যে দৌড়ে পালানো ছাড়া আর কোনও উপায় থাকত না। তিতলির ব্যাপারটি আলাদা। ওর ঠাম্মা পইপই করে বলেছিল যাতে সে কক্ষনো হুপুর ধারে কাছে না যায়। তিতলি অবিশ্যি হুপুকে ভয় পেত না। একদিন ধুপধাপ শব্দ শুনেই তিতলি বাইরে বেরিয়ে দেখে বাড়ি ছাদের প্যারাপেটে লেজ ঝুলিয়ে উদাস ভাবে হুপু বসে আছে। চুপিচুপি ছাদে গিয়ে দশ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে সে বলে, "এই হুপু, হুপু, আমার কথা শুনছিস? আমার সাথে বন্ধুত্ব করবি? একটু বোস, কলা এনে দিচ্ছি।" হুপু কি বুঝেছে, তিতলি জানেনা কিন্তু তাঁর দিকে এমন ভাবে হুপু তাকিয়েছে যেন মনে হয় যেন অনেক চেনা। তিতলি দৌড়ে খাওয়ার টেবিলে রাখা সব কলা নিয়ে এসে হুপুর দিকে এগোতেই, হুপু প্যারাপেট ছেড়ে ধীরে এগিয়ে আসে। তিতিলির হাত থেকে কলা নিয়ে হুপু লাফিয়ে চলে যায়। তিতলির মামা বলেছিল,

শ্রীনিবাস রামানুজন

ছবি
দৃষ্টিশক্তির একটা সীমানা আছে কিন্তু ভারতীয় গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের দৃষ্টিশক্তি ছিল সীমাহীন। তাই বলা হয় রামানুজন ইনফিনিটি দেখতে পারতেন। উদাহরণ দিয়ে বলা যাক। ১+২+৩+৪+......... এভাবে সংখ্যা যদি পরপর অসীমে বেড়ে যায় তাহলে যোগফল কত হতে পারে? ১ থেকে ১০০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলি যোগ করলেই পাঁচ লক্ষ পাঁচশ'র মত বড় সংখ্যা পাওয়া যায়! সাধারণ ভাবে বোঝা যাছে সেই সিরিজের যোগফল অনেক অনেক বড় এবং তা যাইহোক না কেন, ধণাত্মক হবে কারণ এই সিরিজে কোনও ঋণাত্মক সংখ্যাই নেই। রামানুজন প্রমাণ করে দেখালেন, সিরিজটির শেষ ইনফিনিটে হলেও যোগফল ঋণাত্মক এবং কাছেপিঠের একটা সংখ্যা তাও কোনও পূর্ণ সংখ্যা নয় এবং একের থেকেও কম। মাত্র -১/১২! রামানুজন মাত্র বত্রিশ বছর বয়সে মারা যান। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। বাড়িতে ফিরে খুবই অসুস্থ অবস্থায় মারা যাওয়ার মাস তিনেক আগে ১৯২০ সালের তাঁর বন্ধু এবং বিখ্যাত গণিতজ্ঞ অধ্যাপক গডফ্রি হ্যারল্ড হার্ডিকে একটা চিঠি লেখেন। "আমি তোমাকে চিঠি দিতে না পারার জন্য অত্যন্ত দুঃখিত...আমি সম্প্রতি খুব আকর্ষণীয় একটি ফাংশন আবিষ্কার করেছি যাকে আমি "মক" থিটা ফাংশন বলি...এগুল

ভার্চুয়াল ভ্রমণ

ছবি
স্যার আর্থার কনান ডায়েলের ব্রেজিলিয়ান ব্ল্যক ক্যাট গল্পটির বঙ্গায়ন, 'ব্রেজিলের কালো বাঘ'টা সবে আধা শেষ করেছি। ইতিমধ্যেই ক্লাইম্যাক্সের চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছে গেছে। এভারার্ডের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে এই বাঘের খাঁচার ছাউনি খামচে ধরে মার্শাল নিজেকে খানিকটা নিরাপদ জায়গায় নিয়ে গেলেও, সে এখন মুখ হাঁ করা কালো বাঘের ভয়ঙ্কর চোখের নজরে। এমন সময় মোবাইল বেজে উঠল। আমার মামাতো ভাই, পুলক বীরভূমের এক অজগাঁ থেকে ফোন করেছে। কৃষিবিদ্যায় ডিগ্রি নিয়ে সে এখন নিজের পৈতৃক বাড়িঘর ছেড়ে বীরভুম কয়েক বিঘে জমি কিনে 'ফার্ম হাউস' বানিয়েছে। উদ্দেশ্য গ্রামের মানুষদের হাতে কলমে কৃষিশিল্প করে দেখানো। অনেক কথার পর সে আমায় তাঁর খামার বাড়িতে দু'দিন ছুটি কাটানোর অনুরোধ জানায়। পুলকের কথায় যাতে রাজি হই তারজন্য অবিশ্যি একটা টোপ ছিল। আমায় বাঘ দেখেবে! আমি অবিশ্যি রাজি হয়েছি তবে পুলকের বাঘের টোপে নয়। গভীর রাতে কালো বাঘের গল্পে আমারও যেন কেমন ভয় লাগছিল। গল্পের ছ'পাতা বাকি অথচ এক লাইনও আর এগুতে পারলুম না । রাতে ঘুম ভালো হলনা। স্বপ্নে দেখলুম পুলকের পোলট্রি খাঁচায় একটা বাঘ থাবা ভরেছে। 'দেখি না এবার কি হয়' - ভ

ফিউশন বিক্রিয়ার ব্রেকথ্রু।

ছবি
  আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি ঘোষণা করেছে যে ক্যালিফোর্নিয়ার লরেন্স লিভারমোর ন্যাশানাল ল্যাবরেটরির গবেষকরা গত ৫ই ডিসেম্বর   ন্যাশনাল ইগনিশন ফ্যাসিলিটির পরীক্ষাগারের প্রথম নিয়ন্ত্রিত ফিউশন পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।   ফিউশন বিক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক পরমাণু যুক্ত হয়ে এক বা একাধিক ভিন্ন মৌলের পরমাণু তৈরি করে তাই নিউক্লিয় ফিউশন বিক্রিয়া বলে।   দুটি আলদা মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াস জুড়ে এক হয়ে গেলে নতুন নিউক্লিয়াসের ভর সামান্য কমে যায়। এই কমে যাওয়ার ভরই শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। আইনস্টাইনের বিখ্যাত ফর্মুলা , ই ইক্যোয়াল টু এম সি স্কোয়ার ! সি অর্থাৎ আলোর গতিবেগ অকল্পনীয় , এক সেকেন্ডে প্রায় তিন লক্ষ কিলোমিটার। সুতরাং এই আলোর গতিবেগের বর্গ মানে আরও বড় সংখ্যা। এই সংখ্যার সাথে খুউউউব স্বল্পপরিমান ভরের গুন হলেও যে শক্তি পাওয়া যায় তার পরিমাণ অনেক।   এই ' ব্রেকথ্রু ' বিষয়টি হল , যে পরিমাণ শক্তি খরচ করে দুটি নিউক্লিয়াস যুক্ত করা গেল এবং সংযুক্তির পরে যে শক্তি পাওয়া গ

বাড়ির ছাদে গ্রিড সংযুক্ত সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা

ছবি
পশ্চিমবঙ্গে সৌর বিদ্যুৎ সহ অন্য অপ্রচলিত শক্তির উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করা হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশনের রেগুলেশন অনুযায়ী। সংশিষ্ট মূল রেগুলেশন প্রকাশিত হয়েছিল ২২ শে মার্চ ২০১৩। গত ২২ শে ডিসেম্বর ২০২০ তে মূল রেগুলেশনের কিছু সংশোধনী প্রকাশ করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের বিদ্যুতের মূল্য সংক্রান্ত  নীতির সাথে সঙ্গতি রেখেই  মূল   ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশন (কো-জেনারেশন র অ্যান্ড জেনারেশন অফ ইলেক্ট্রিসিটি ফর্ম রিনিউবেল সোর্সেস অফ এনার্জি) রেগুলেশনস, ২০১৩’ -এর সংশোধনী ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশন (কো-জেনারেশন অ্যান্ড জেনারেশন অফ ইলেক্ট্রিসিটি ফর্ম রিনিউবেল সোর্সেস অফ এনার্জি) (ফাস্ট অ্যামেন্ডমেন্ট) রেগুলেশনস, ২০২০’ প্রকাশ করা হয়। এই লেখায় বাড়ির ছাদে গ্রিড সংযুক্ত সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা সংস্থাপন  সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপুর্ণ বিষয় তুলে ধরা হল। কারা বাড়ির ছাদে গ্রিড সংযুক্ত সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা সংস্থাপন করতে পারবেন? রাজ্যের যে কোনও বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার কনজিউমার তাঁর ব্যবহার্য্য বিদ্যুতের পুরোটা বা আংশিক প্রয়

সোলার ফটোভোল্টাইক প্রযুক্তি

ছবি
সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সবচেয়ে সরলতম প্রযুক্তি হল ‘ সোলার ফটোভোল্টাইক ’ বা সৌর আলোক প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে কোনও ঘুর্নায়মান অংশ নেই . জ্বালানীর উৎস, সূর্যের আলো থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।     সারা বিশ্বেই ‘সোলার ফটোভোল্টাইক প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই জনপ্রিয় এবং দ্রুত এর ব্যবহার বাড়ছে। ক্যালকুলেটর, ঘড়ি’র মত ছোট ইলেকট্রনিক সামগ্রী থেকে বিদ্যুৎবিহীন অঞ্চলে বিদ্যুতের ব্যবস্থা, অন্যদিকে বিদ্যুৎ গ্রিড সংযুক্ত এলাকায় বাড়িতে প্রচলিত বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার অকল্পনীয়। বর্তমানে প্রচলিত শক্তির উৎস যেমন কয়লা, খনিজ তেল এবং গ্যাসের উপর নির্ভরতা কমাতে বড় বড় ইউটিলিটি - স্কেল সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। একটি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষমতা এমনকি ১ লক্ষ মেগাওয়াট হতে পারে। আমাদের দেশে বিকল্প শক্তি এবং সৌর বিদ্যুতের উন্নয়ন এবং প্রসারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নবী এবং নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক ( মিনিস্ট্রি অফ নিউ অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি ) কাজ করছে। দেশের প্রতিটি রাজ্যে সৌর বিদ্যুতের সাথে অপ্রচলিত শক্তির উন্নয়ন এবং ব্যবহার জনপ্রিয় করার জন্য এক একেকটি স্টেট